ঢাকার দোহারে গভীর রাত পর্যন্ত শিশুশ্রম;তুচ্ছ কারনে মালিকের অমানবিক অত্যাচার
বিশেষ প্রতিনিধি: ২১ জুন রবিবার,ঘড়ির কাঁটায় রাত ১০টা ৩০ মিনিট। ঢাকার দোহার উপজেলার মেঘুলা বাজারে নদীর পাড় সংলগ্ন একটি খাবারের হোটেল খেকে হঠাৎ একটি শিশুর চিৎকার। কাছে যেতেই অমানবিক দৃশ্য চোখে পড়লো। সায়মন নামের একটি ৮ থেকে ৯ বছরের শিশু বুকের মধ্যে হাত দিয়ে ‘মা’ মা বলে চিৎকার করে কাদঁছে। তার চিৎকারে এগিয়ে আসলো আশেপাশের বেশ কয়েকজন।সবারদিকে তাকিয়ে থেকে কান্না করছিলো শিশুটি। জিজ্ঞেস করতেই বললো,তাকে মারধর করেছেন হোটেল মালিক।
মারধরের কারন জানতে চাইলে শিশু সায়মন জানায়, সকাল ৬টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় তাকে। কাজ করতে গিয়ে সামান্য কোন ভুল হলেই শারীরিক নির্যাতন করেন হোটেল মালিক আলআমিন। এসময় কান্নাজরিত কন্ঠে সায়মন আরো জানায়,পানি খাওয়ার মগে ময়লা লেগে থাকায় রেগে গিয়ে তার বুকে ও পায়ে আঘাত করেন হোটেল মালিক। এদিকে কিছুক্ষন পর আবার জোরপূর্বক কাজ করতে বাধ্য করা হয় শিশুটিকে। এবং মারধরের কথা কাইকে বলতে নিষেধ করেন তিনি। কোন উপায় না পেয়ে মারধরের ভয়ে অসুস্থ অবস্থায় আবার কাজ শুরু করে সায়মন।
এসময় স্থানীয়রা জানান, গত ১২ দিন ধরে এই খাবার হোটেলে কাজ করে সায়মন। প্রায় সময়ই শিশুটিকে মারধর করেন হোটেল মালিক আলআমিন। এছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে মাস্ক ছাড়াই কাজ করেন হোটেল মালিক ও মিশু সায়মন। এমন শিশুশ্রম ও নির্যাতন বন্ধে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এবিষয়ে হোটেল মালিক আলআমিন জানান, তার কাজের সাহায্যের জন্য শিশুটিকে রেখেছেন। মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমি তাকে মারধর করিনি শাসন করেছি। শিশুশ্রমের আইনের বিষয়ে কিছু জানেনা বলে জানান তিনি।
তথ্যমতে,শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন ২০১৮-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। কেউ যদি শিশুশ্রমিক নিয়োগ করে, তাকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড সহ আরো কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে।