নওগাঁর আত্রাইয়ে নদী ভাঙ্গনের কবলে আটগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
এমরান মাহমুদ প্রত্যয়, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সবচেয়ে পুরাতন আটগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চলতি বর্ষা মসুমে নদী ভাঙ্গনের ঝূঁকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের কিছু অংশ চলে গেছে নদীগর্ভে। সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিনের টানা অতি বৃষ্টির কারণে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের পিছনের দিক এবং খেলার মাঠের কিছু অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। বর্ষায় বিদ্যালয়টি ঝূঁকিতে রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। অনগ্রসর শিশুদের শিক্ষা দানের লক্ষে ১৭৫৭ সাল স্থাপন করা হয় বিদ্যালয়টি। নদী ও বিল আবৃত আটগ্রাম মানুষর শিক্ষার উন্নয়ন ঘটলেও পিছু ছাড়নি তাদের দুর্যোগ এবং রাস্তা-ঘাট বিহিন চলাফেরা সহ নদী ভাঙ্গন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাথে প্রায় যোগাযোগ বিছিন্ন কালিকাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম আটগ্রাম। গ্রামের পূর্বদিকে ছোট যমুনা নদী দক্ষিনে আত্রাই নদী এবং পশ্চিমে রয়েছে বিরাট আকারের বিল। বর্ষাকালে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী এবং গ্রামের মানুষের এপাড়া-ওপাড়ায় যাতায়াত একমাত্র নৌকায় ভরসা। নদীর পাড়েই রয়েছে আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এই বিদ্যালয়ে ৬ কক্ষের ২ টি ভবন রয়েছে। ভবনপর পিছনেই রয়েছে নদী। সেখানেও রয়েছে বেশ কিছু ভাঙ্গনের চিহ্ন যা বিদ্যালয়ের কিছুটা জমি ইতিমধ্যে গ্রাস করেছে। আর বিদ্যালয়ের দক্ষিনে রয়েছে বড় একটি ভাঙ্গন। মাঠের অনেকটা জায়গা দখল করে নিয়েছে এই ভাঙ্গন। ভাঙ্গনটি ক্রমান্বয়ে বিদ্যালয় ভবনের দিকে এগিয়ে আসছে। বর্তমান ভাঙ্গনে ভবনের কাছাকাছি আসায় বিদ্যালয় বঁচানো নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষক ও এলাকার মানুষ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মুকুল উদ্দিন জানান, ১একর ২৪ শতক জমির উপর ১৭৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয় বর্তমান ১৫৬ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক আছেন ৬ জন, আর এমএলএসএস ১ জন। বিদ্যালয়টি এলাকার মধ্যে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরও জানান বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ৮/১০শতক জমির অংশ নদীতে চলে গেছে। পানির স্রোত এতো বেশি যে ভাঙ্গন ক্রমেই বড় হয়ে এগিয়ে আসছে বিদ্যালয় ভবনের দিকে। ভাঙ্গনের কারন বর্তমান ভবনটি ধসে পড়ার আশংকার মুখে রয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমরা ২বার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের অনুদানে গত ৭/৮ বছর আগে বিদ্যালয়পর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছিলাম কিন্তু নদীর স্রোতের কারণে তা বিলিন হয়ে গেছে। নদীতে ব্রিজ এবং রাস্তা-ঘাট সংস্কারের দাবি জানান তিনি। বিদ্যালয় ম্যানজিং কমিটির সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের পূর্ব দিয়ে বয়ে যাওয়া ছেট যমুনা নদী অনেকটা জমি গ্রাস করেছে। আমরা নদীর পাড়ে বনজ গাছ রোপন করে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারিনি। বিদ্যালয়ের উত্তর ও পূর্ব পাশে নদীর পাড় প্যালাসাইট দিয়ে বাঁধ দেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা মাসিক সম্বয়ন কমিটির আগামী সভায় বিদ্যালয় ভাঙ্গনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।